চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ
সাবেক যুবলীগ নেতা ও শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেমকে
কুপিয়ে হত্যার এজাহারভূক্ত প্রধান আসামীদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের
দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। জেলা যুব
মহিলা লীগ ও জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের কর্মীদের আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসীর ব্যানারে ঘন্টাব্যাপি আয়োজিত এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিনা বেগম, জেলা মহিলা লীগের
দপ্তর সম্পাদক সুলেখা বেগম, জেলা যুব মহিলা লীগের প্রচার সম্পাদক বিউটি
আক্তার, সদর থানা যুব মহিলা লীগের সম্পাদিকা রোকেয়া বেগম রাখি, পৌর যুব
মহিলা লীগের সভাপতি জুঁই আক্তার প্রমুখ।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় প্রকাশ্য
দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক
কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেমকে। এরপর থানায় মামলা হলে পুলিশ কয়েকজন আসামীকে
গ্রেফতার করলেও তারা শহরের চিহ্নিত বখাটে ছিনতাইকারী। কিন্তু পুলিশ হত্যা
মামলার প্রধান আসামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান ও ২ নম্বর
আসামী জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সামিউল হক লিটনকে গ্রেফতার করেনি।
অথচ তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
নেত্রীরা আরও বলেন, সাবেক যুবলীগ নেতা খাইরুল আলম জেমকে হত্যার পর জেলা
শহরের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি এমন হয়েছে যে শহরের ভেতর নারীরা
নিরাপদে চলাফেরা করতে পারছে না। কিশোর গ্যাং এর উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।
কারণ হত্যার পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামীরা তাদের ব্যবহার করছে। আর তাই
জেম হত্যা মামলার প্রধান আসামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান ও
জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সামিউল হক লিটনকে দ্রæত গ্রেফতার করে
বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান মানববন্ধনে আগত নেতৃবৃন্দ। আর তা না হলে
আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারী দেয়া হয় মানববন্ধন
থেকে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আওয়ামী মহিলা লীগ ও যুব
মহিলা লীগের নেত্রীরা।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে, জেলা যুব মহিলা লীগের সদস্য এমালি খাতুন,
জুলেখা বেগম, রোজি খাতুন, শাহনাজ খাতুনসহ বিভিন্নস্তরের কর্মীরা উপস্থিত
ছিলেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, এখন পর্যন্ত এই
মামলায় ১৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামীদেরকে গ্রেফতার
করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে আদালত
রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। রিমান্ডে আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য
উদঘাটন হবে ও বাকি আসামীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার উদয়ন
মোড়ে ইফতারির বাজার করে বাড়ি ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা খায়রুল আলম জেমকে
দেশী-বিদেশী ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা
হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে
তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার প্রক্রিয়াকালে তার মৃত্যু হয়।
পরদিন ২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার হত্যার সঠিক বিচার দাবিতে মরদেহ নিয়ে
বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করেন দলীয় নেতাকর্মী ও স্বজনরা। এদিকে
হত্যাকান্ডের তিন দিন পর গত রবিবার (২২ এপ্রিল) খাইরুল আলম জেমের বড় ভাই
মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, দুই
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৪৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply